খাদ্য-পুষ্টি ও জীবনযাত্রা

ওজন কমাতে দৈনিক কী পরিমাণ শর্করা/কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করা উচিত?

খাদ্যতালিকায় কম কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা রাখাটা ওজন কমানোর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণা ঠিক এমনটাই বলে। লো-কার্ব ফুড বা কম শর্করা জাতীয় খাবার আমাদের ক্ষুধাকে উপশম করে এবং খাওয়ার সময় খাবার গ্রহণের পরিমাণ না কমিয়ে কেবলমাত্র লো-কার্ব ফুড গ্রহণ করেও ওজন কমানো যায়।

কেন আপনি কম কার্বোহাইড্রেট খাবেন? 

দ্য ডায়েটারি গাইডলাইন অব আমেরিকা-এর মতে আমাদের দৈনিক গ্রহণ করা মোট ক্যালোরির প্রায় ৪৫-৬৫% আসে কার্বোহাইড্রেট থেকে। তাই খাদ্যতালিকায় কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কমানো মানেই গৃহীত ক্যালোরির পরিমাণ কমানো। লো ফ্যাট বা কম চর্বিযুক্ত ডায়েটের তুলনায় লো কার্বোহাইড্রেট ডায়েট ওজন কমাতে অধিক কার্যকরী। এজন্য হাই কার্ব ফুড যেমন: সাদা চিনি, সাদা ময়দা, চাল, সাদা পাউরুটি ইত্যাদির পরিবর্তে বিভিন্ন শাকসবজি, ফলমূল ও আমিষ জাতীয় খাবার খাদ্যতালিকায় যুক্ত করতে হবে।

কতটুকু কার্বোহাড্রেট খেতে পারেন?

দিনে কতটুকু শর্করা খাবেন তা নির্ভর করে আপনার বয়স, ওজন, লিঙ্গ, কাজের পরিমাণ ইত্যাদির ওপর। তবে স্বাভাবিক মাত্রা ধরা হয় দিনে ৩০০ গ্রাম। তবে ওজন কমানোর লক্ষ্যে আপনি সেটা কমিয়ে ৫০ -১৫০ গ্রাম পর্যন্ত আনতে পারেন । 

ওজন কমাতে কারা কতটুকু পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করবেন?

যাদের শরীর স্লিম, যারা কর্মচঞ্চল এবং কেবলমাত্র ফিট থাকতে চান তারা প্রতিদিন ১০০-১৫০ গ্রাম কার্বোহাড্রেট গ্রহণ করেও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন। তবে খেয়াল করে প্রতিদিন ঠিকমতো সকল প্রকার সবজি, ফলমূল এবং স্বাস্থ্যকর কার্বস যেমন মিষ্টি আলু, গোটা শস্যদানা এবং ওটস গ্রহণ করতে হবে।

যাদের ওজন একটু বেশি তারা ৫০-১০০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করে ওজন কমিয়ে আনতে পারেন। সেক্ষেত্রে তাদেরকেও কার্ব জাতীয় খাবারের পরিবর্তে শাকসবজি, ফলমূল, শস্যদানা গ্রহণ করতে হবে।

যাদের ওজন একদম বেশি , দ্রুত ওজন কমাতে চান এবং শরীরে মেটাবলিক সমস্যা আছে তারা দৈনিক ২০-৫০ গ্রাম কার্ব বা শর্করা গ্রহণ করতে পারেন। পাশাপাশি শাকসবজি , বেরি জাতীয় ফল যেমন জাম, ক্রিম, বাদাম এবং শিমের বিচি জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে পারেন।

লো-কার্ব ফুড ডায়েট কেবলমাত্র ওজনই কমায় না এটি আমাদের সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। সঠিক শারীরিক গঠনে কার্বোহাড্রেটেরও প্রয়োজনীয়তা আছে। হাই কার্ব ফুড বা উচ্চ শর্করা জাতীয় খাবার এড়িয়ে গিয়ে তাই অল্প শর্করাযুক্ত খাবার বেছে নেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ।

যা এড়িয়ে যাবেন: 

  • সাদা চিনি
  • সাদা আটা-ময়দা
  • প্রসেসড বা প্যাকেটজাত খাবার
  • নুডুলস, পাস্তা

যা গ্রহণ করবেন: 

  • কম ফ্যাটযুক্ত মাছ-মাংস
  • ডিম
  • শাকসবজি 
  • বাদাম 
  • ফলমূল
  • ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার
  • গোটা শস্যদানা 
  • স্বাস্থ্যকর ফ্যাটস

সঠিক খাবার বাছাই করার মাধ্যমে ওজন সহজেই কমিয়ে আনা সম্ভব। লো কার্ব ডায়েট শুরু করার আগে ভালো করে যাচাই করে নিতে হবে যা খাচ্ছেন সেটা কতটুকু স্বাস্থ্যকর এবং আপনার দৈনিক কতটুকু দরকার আর আপনি কতটুক খাচ্ছেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সম্পর্কিত পোস্ট

আরও আরও...আর পাওয়া যায়নি.