করােনা সংক্রান্ত তথ্য

কোভিডের ক্যাপসুল যেভাবে ব্যবহার হয়

শুরু থেকে করোনাভাইরাসের স্বীকৃত কোনো প্রতিষেধক না থাকায় লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা হয়েছে রোগীদের। কোভিডের মুখে খাওয়ার ওষুধ আবিষ্কারের পর সেই শূন্যতা পূরণ হয়েছে। বাজারে এসেছে ‘মলনুপিরাভির’ নামক কোভিডের ক্যাপসুল।

মলনুপিরাভির ক্যাপসুল/ট্যাবলেট মূলত ফ্লু এর চিকিৎসার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদেরকে এই ঔষধটি দিনে দুইবার দেওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানিসহ ১৭টি দেশে ওষুধটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয়েছে। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে দেখা গেছে এই ঔষধটি রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুঝুঁকি অর্ধেক কমিয়ে দেয়। এটাই করোনাভাইরাস চিকিৎসার প্রথম ঔষধ যা শিরায় প্রয়োগ না করে মুখে সেবন করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের মার্ক শার্প অ্যান্ড ডোম (এমএসডি) ও রিজেবাক বায়োথেরাপিউটিক যৌথভাবে করোনার চিকিৎসায় প্রথম এই ঔষধ তৈরি করেছে। যুক্তরাজ্যে অনুমোদন পাওয়ার পর বাংলাদেশের ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরও এই ক্যাপসুল ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। দেশের বাজারে মলনুপিরাভিরের জেনেরিক ভার্সন এনেছে কয়েকটি ওষুধ কোম্পানি।

কার্যকারিতা

মৃদু ও মাঝারি ধরনের লক্ষণযুক্ত করোনা রোগী, যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ অন্যান্য কোমর্বিডিটি আছে, তাদেরকে গুরুতর অবস্থার মুখোমুখি হওয়া থেকে রক্ষা করে মলনুপিরাভির।

ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে দেখা গেছে, এই ক্যাপসুল মারাত্মক ঝুঁকিতে থাকা কোভিড রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার বা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার হার ৫০ শতাংশ কমিয়েছে।

করোনার লক্ষণ দেখা দেওয়ার পরপর এই অ্যান্টিভাইরাল ক্যাপসুল বেশি কার্যকর। এ কারণে লক্ষণ দেখা দেওয়ার পাঁচ দিনের মধ্যে এটা সেবনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

কোভিড রোগীদের গুরুতর অবস্থা থেকে মুক্তি দিলেও মুখে খাওয়ার এই ঔষধ কোনোভাবেই কোভিড টিকা বিকল্প নয়। করোনা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে অবশ্যই টিকা নিতে হবে।

কীভাবে মলনুপিরাভির প্রেসক্রাইব করবেন চিকিৎসক?

কোভিড পিল কোনো অবস্থাতেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া সেবন করা যাবে না। নিচের নির্দেশনা মেনে এই ঔষধ প্রেসক্রাইব করতে পারবেন চিকিৎসকরা।

> কোডিড পজিটিভ রোগীদের যদি কোভিডের লক্ষণ মৃদু বা মাঝারি হয় এবং সেই সাথে কোনো এক বা একাধিক ঝুঁকি থাকে। ঝুঁকিতে থাকা হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে: যাদের বয়স ৬০ বছরের অধিক, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও অন্যান্য কোমর্বিডিটির যে কোনো একটি রয়েছে।

> কোভিড পজিটিভ রোগীদের রোগীদের লক্ষণগুলো যদি তীব্র হয়, তাহলে এই ঔষধ ব্যবহার করা যাবে না।

> কোডিড ১৯ আক্রান্ত জটিল রোগীদের এবং কোভিড রোগের লক্ষণ প্রকাশের ৫ দিন অতিবাহিত হয়ে গেলে কার্যকরী হয় না এই ঔষধ।

কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কী?

বাংলাদেশে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এই ঔষধটির খুব জটিল কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বলে জানিয়েছে। যদিও ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে স্বাভাবিক ধরণের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (যেমন- মাথাব্যথা, বমি এবং মাথা ঝিমঝিম করার মতো হালকা থেকে মাঝারি ধরণের প্রতিক্রিয়া) দেখা দিতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। বাংলাদেশে এই ঔষধটি ১৮ বছর কিংবা তার চেয়ে বেশি বয়সী রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে। তবে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সুপারিশ ছাড়া কোন রোগীকে নিজে নিজে মলনুপিরাভির কিংবা অন্য কোন ঔষধ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সম্পর্কিত পোস্ট

আরও আরও...আর পাওয়া যায়নি.