শিশুর যত্ন ও বেড়ে উঠা

মহামারিতে বাচ্চাদেরও ওজন বেড়েছে: বাবা-মা কী করবেন?

করোনাভাইরাসের এই মহামারি শুধুমাত্র একটি মরণব্যাধি নিয়ে আসেনি, সাথে এনেছে আরো অনেকগুলো আতঙ্ক। প্রথম দিকে সবকিছুর মতোই বন্ধ ছিল সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন এই কোভিড ছুটির কারণে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সাথে সাথে শারীরিক -মানসিক অবস্থারও ব্যাপক বির্পযয় ঘটেছে।

এর মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক একটি ক্ষতি হলো শিশুদের ওজন বৃদ্ধি । কিন্তু শিশুদের ওজন বৃদ্ধি পেল কীভাবে?

অভিভাবকরা বাসায় থেকে হোম অফিস করলেও খুব বেশি তত্ত্বাবধানে থাকেনি শিশুরা। যার ফলে তাদের নিয়মিত খাদ্যাভ্যাসের বাইরে অনেক ক্ষেত্রেই জাংক ফুড বা প্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি খাওয়া হয়েছে।  প্রক্রিয়াজাত খাবারে শর্করা, স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি থাকে এবং ফাইবার কম থাকে।  এই ধরনের উচ্চমাত্রার শর্করা এবং চর্বিজাতীয় খাবার যেকোনো মানুষের জন্যই মোটা হয়ে যাবার কারণ হতে পারে। 

অন্যদিকে শারীরিক দূরত্ব রক্ষা করতে যেয়ে বাচ্চারা খেলতে যেতে পারেনি। আবার শারীরিকভাবে উপস্থিত থেকে ক্লাস না হওয়া বা কোথাও বেড়াতে না যাওয়াতে তাদের সক্রিয় হওয়ার সুযোগও কম ছিল। 

এই সবগুলো কারণেই শিশুদের স্থূলতা বেড়েছে এবং ভয়ানক স্বাস্থ্য হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে।

**শৈশবের স্থূলতা কী কী ক্ষতি করতে পারে? **

অতিরিক্ত স্থূলতার কারণে শিশুদের হার্টের অসুখ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল, ফ্যাটি লিভার, হাঁপানি, বিষণ্ণতা এবং ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগ হতে পারে। 

**কীভাবে এর থেকে শিশুরা মুক্তি পাবে?**

কোভিড মহামারিতে সৃষ্ট দৈনন্দিন জীবনের চাপ, লকডাউন এবং অস্থিরতার সাথে মোকাবিলা করা সববয়সি মানুষের জন্যই কঠিন ছিল। শিশুদের জন্যও তাই! এ কারণে এই মারাত্মক বাড়তি ওজন কমাতে তাদের পাশে থাকতে হবে আমাদের, অভিভাবকদের।

**অভিভাবকদের কী করা উচিত?**

১। শিশুর সারাদিনের কর্মসূচী এবং খাবারের সময়ের একটা পরিকল্পনা কিংবা ছক থাকতে হবে। শিশু যেন পর্যাপ্ত পরিমাণে সুষম খাবার খায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।  

২। কোমল পানীয় একেবারে এড়িয়ে চলা ওজন কমানোর একটি দুর্দান্ত উপায়। অভিভাবকদের নিজেদেরকেও কোমল পানীয় থেকে দূরে থাকতে হবে। 

৩। প্রতিদিন অন্তত এক বেলা পুরো পরিবার একসাথে খাওয়া শিশুদের জন্য খুবই উপকারী।

৪। মোটা হওয়া নিয়ে কোনোভাবেই নেতিবাচক কথা বলা যাবে না শিশুদের। প্রয়োজনে তাদের সাথে পুষ্টিকর খাবারের বিষয়ে আলোচনা করতে হবে এবং অনেক উৎসাহ দিতে হবে।

৫। প্যাকেটজাত খাবার যেমন চিপস, বিস্কুট বা চকলেট–যতটা কম রাখা যায় বাড়িতে ততই ভালো। 

৬। শিশুদের নিয়মিত ব্যায়াম করা জরুরি। খেলার মাঠে যেতে না পারলেও বাসার ভেতরেই তাদেরকে খেলার জায়গার ব্যবস্থা করে দিতে হবে।

সোর্স:

The Pandemic Has Caused Kids to Gain Weight Too: How Parents Can Help (healthline.com)

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সম্পর্কিত পোস্ট

আরও আরও...আর পাওয়া যায়নি.