শিশুর যত্ন ও বেড়ে উঠা

স্কুলে কোভিড সুরক্ষায় আপনার শিশুকে যা মেনে চলতে শেখাবেন

কোভিড মহামারি শেষ না হলেও স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই জরুরি। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিদ্যালয় খুললেও আমাদের নিজেদেরকে নিরাপদ রাখার জন্যই মেনে চলতে হবে কিছু নিয়ম এবং নিতে হবে কিছু পদক্ষেপ। এই প্রদক্ষেপগুলো ঠিকঠাক পালন করতে পারলেই আমাদের সন্তানদের স্কুলে যাওয়া যেমন আরো বেশি নিরাপদ হয় তেমনি কোভিড ১৯-এর সংক্রমণও কমানো সম্ভব। চলুন জেনে নেই স্কুলে আমাদের সন্তানদেরকে নিরাপদ রাখতে আমরা কী কী পদক্ষেপ নিতে পারি– 

  • শিক্ষার্থীদেরকে সাবান পানি দিয়ে ২০ সেকেন্ড হাত ধোওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। 
  • শিক্ষার্থীদের হাত ধোয়ার জন্য স্কুলে সাবান, পরিস্কার পানির প্রবাহ, হাত মোছার জন্য টিস্যু/তোয়ালের ব্যবস্থা করতে হবে।
  • একজনের ব্যবহার করা টিস্যু বা রুমাল আরেকজন যেন ব্যবহার  না করে সেটাও নিশ্চিত করতে হবে। ব্যবহার শেষে এগুলো ঢাকনাওয়ালা ময়লার ঝুড়িতে ফেলার অভ্যাস করতে হবে।
  • সবার মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে। স্কুলে বাড়তি মাস্ক রাখতে হবে।
  • হাঁচি বা কাশি এলে টিস্যু চেপে ধরা, টিস্যু না থাকলে হাতের কনুই চেপে ধরা এবং তারপর দ্রুত হাত পরিষ্কার করার অভ্যাস শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক বা কর্মচারী সবার ভেতরই গড়ে তুলতে হবে। 
  • মাস্ক থাকা অবস্থায় হাঁচি দিলে মাস্ক বদলে ফেলতে হবে এবং মুখ পরিষ্কার করতে হবে। প্রয়োজনে শিক্ষক এবং ছাত্রদের সম্মিলিত কমিটি গঠন করা যেতে পারে। অভিভাবকদেরও এতে যুক্ত করা যেতে পারে।
  • কীভাবে হাত ধুতে হবে পর্যায়ক্রমে কয়েকটি চিত্র দিয়ে সেটি দেখানো যেতে পারে। এ জাতীয় ছবি সম্বলিত পোস্টার বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কমন পয়েন্টে সেঁটে রাখতে হবে। 
  • প্রতিটা ক্লাসরুমে পর্যাপ্ত হাত জীবানুমুক্তকরণ উপকরণের ব্যবস্থা রাখতে হবে। সম্ভব হলে প্রতিটি শ্রেণিকক্ষে, ক্যাফেতে, হলরুম এবং  টয়লেটের কাছে অ্যালকোহলযুক্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখুন।  
  • স্কুলের কয়েকটি পয়েন্টে সাবান এবং পানি দিয়ে হ্যান্ডওয়াশিং স্টেশন প্রস্তুত করা যেতে পারে এবং এগুলোর পুনঃসরবারাহ নিশ্চিত করতে হবে।  
  • পরিষ্কার হাতেও ছাত্রদের তাদের চোখ, নাক এবং মুখ স্পর্শ এড়াতে উৎসাহিত করতে হবে। জীবাণু ওসব জায়গা থেকে পরিষ্কার হাতে চলে আসতে পারে এবং ক্লাসরুমের চারপাশে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
  • বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ, কমন রুম, টয়লেট এবং ক্লাসরুম–এসব জায়গা প্রতিদিন কমপক্ষে একবার করে জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। 
  • বিদ্যালয়ের যেসব জায়গায় শিক্ষার্থীরা বারবার হাতের স্পর্শ করে যেমন দরজার হাতল, বেঞ্চ–এসব জায়গা দিনে কয়েকবার করে জীবানুমুক্ত করতে হবে। 
  • শিক্ষার্থীদেরকে যেখানে সেখানে কফ, থুতু বা সর্দি ফেলার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করতে হবে। 
  • শিক্ষার্থীদের সামাজিক দূরত্ব মেনে ক্লাসরুমে বসার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে মেঝেতে দাগ কেটে কিংবা বেঞ্চ এ নির্দেশনা চিহ্ন দিয়ে শিক্ষার্থীদেরকে ৩ ফুট দূরত্ব মেনে বসানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
  • স্কুলে ঢোকার সময় কিংবা ছুটির পর বের হবার সময় শিক্ষার্থীরা যেন হুড়োহুড়ি করে বের না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রয়োজনে আলাদা আলদা ক্লাসের ছুটির সময় আলাদা করে দিতে হবে। 
  • শিক্ষার্থীদেরকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে সম্মিলিতভাবে উৎসাহ দিতে হবে। এজন্য প্রয়োজনে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে গান, ছড়া, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা আয়োজন করা যেতে পারে। পুরস্কার থাকলে শিক্ষার্থীরা আরো বেশি উৎসাহিত হবে।
  • এসব নিয়মগুলো শুধু শিক্ষার্থীরা নয় বরং বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মচারীসহ অভিবাবকদেরকেও মেনে চলতে হবে।
  • যদি কোনো শিক্ষার্থী কোভিড আক্রান্ত হয়ে যায় কিংবা কোনো ধরনের কোভিডের লক্ষণ প্রকাশ পায় তবে তার কোয়ারেন্টাইন মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে স্কুলে আসতে দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে আক্রান্ত শিক্ষার্থীকে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

বিদ্যালয়গুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে পারলে বিদ্যালয় খোলা রাখা সহজ হবে। ফলে আমাদের সন্তানরা যেমন স্কুলেও নিরাপদ থাকবে তেমনি পাবে নিরাপদ ভবিষ্যতের পাথেয়। 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সম্পর্কিত পোস্ট

আরও আরও...আর পাওয়া যায়নি.