প্রচলিত রােগ ও সুরক্ষা

ডায়রিয়া থেকে বাঁচতে খাদ্য ও পানীয় বিষয়ক সতর্কতা

এই গরমে ডায়রিয়ার প্রকোপ প্রচণ্ডভাবে বাড়ছে। আর ডায়রিয়া মূলত পানিবাহিত রোগ। তাই খাবার–সেটা কাঁচাই হোক আর রান্নাই হোক, অসতর্ক থাকলে আপনি

পানি বাহিত যেকোনো রোগেই আক্রান্ত হতে পারেন। এই কারণে খাদ্য নিরাপত্তার একদম মৌলিক ব্যাপারগুলো সম্পর্কে জানা থাকাটা খুবই জরুরি। আর এই গরম

মৌসুমে নিজের এবং পরিবারের সুরক্ষার জন্য এগুলো মাথায় রেখেই রান্না ও খাওয়া-দাওয়া করতে হবে।

রান্না বান্নার ক্ষেত্রে সতর্কতা:

  • কাঁচা যেকোনো কিছু খাওয়ার আগে অবশ্যই ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে। হাত যতই পরিষ্কার দেখাক না কেন, সাবান দিয়ে হাত কচলে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নেওয়া আবশ্যক।
  • যেকোনো আমিষ (গোরু, মুরগি বা মাছ) ভালোমতো সিদ্ধ করা। যেমন, গোরুর মাংস রান্না করতে হলে পাত্রের ভিতরের তাপমাত্রা কমপক্ষে ৭১ সেলসিয়াসবা ১৬০ ফারেনহাইট হতে হবে। মুরগির মাংসের ক্ষেত্রে এটা ১৬৫ ফারেনহাইট, মাছ ১৪৫ ফারেনহাইট। রান্না করতে হবে ২০-৩০ মিনিট ধরে।
  • যেকোনো কাঁচা মাংস হাত দিয়ে ধরার পর অন্য কিছু ধরার আগে অবশ্যই হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে, পাশাপাশি যেখানে রেখে মাংস কাটা হয়সেই স্থান এবং রান্নাঘরের বাসন-কোসনও ধুয়ে ফেলতে হবে ভালোভাবে।
  • খাবার পরিবেশনের আগেও হাত ধুয়ে নিতে হবে।
  • রান্না খাবারের সাথে কাঁচা খাবার মেশানো যাবে না।
  • রান্নার সব বাসন-কোসন, তৈজসপত্র এবং রান্নার জায়গা (কাটিং বোর্ড, বেসিন, কাটাকাটির জায়গা, চুলার আশপাশ ইত্যাদি) প্রতিবার ব্যবহারের আগেধুয়ে জীবাণুমুক্ত করে নিলে ভালো হবে। পরিষ্কার করার জন্য পানি এবং ডিটারজেন্ট ব্যবহার করতে হবে, তারপর গরম পানি ঢেলে দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।আর খাবার কোথাও পড়ে গেলে জীবাণুমুক্তকরণ তরল দিয়ে মুছে নিতে হবে জায়গাটা।
  • কোনো রোগে আক্রান্ত হলে লক্ষণ থাকাকালীন এবং সুস্থ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত রান্না করা যাবে না।

পানি পানের ক্ষেত্রে সতর্কতা:

  • যেখান থেকে পানি আনা হচ্ছে সেটা নিয়মিত পরীক্ষা করে দেখা উচিত যে তাতে কোনো জীবাণু জন্মাচ্ছে কি না।
  • সাঁতার কাটার সময়, সুইমিং পুল বা ঝরনা, নদী, দিঘি, সমুদ্র এসব জায়গা থেকে পানি গিলে ফেলা যাবে না।
  • দিঘি, নদী, ঝরনা, বা অগভীর ডোবা থেকে অপরিশোধিত পানি খাওয়া যাবে না।
  • কোথাও বেড়াতে গেলে না জেনেই কোনো কল থেকে পানি বা বরফ ব্যবহার করা যাবে না। পানিকে বিশুদ্ধ করে তারপর পান করতে হবে।
  • রাস্তার পাশের পানিপুরি, ভেল্পুরি, চটপটি, ফুচকা জাতীয় খাবারের সাথে যেই টক দেওয়া হয়–সেই টকের পানিতে ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে,যা ডায়রিয়ার অন্যতম প্রধান কারণ। এ কারণে রাস্তার পাশের যেকোনো খাবার খাওয়ার সময়ই সতর্ক থাকা ভালো। প্রয়োজনে এসব খাবার বর্জন করতে হবে।

রোগ প্রতিকারের চাইতে প্রতিরোধ অনেক গুণ উত্তম। আর ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগগুলো শুধুমাত্র সামান্য সতর্কতা দিয়েই প্রতিরোধ করা সম্ভব।

নিজে এসব সতর্ক হওয়ার পাশাপাশি, বাড়ির ছোটো বাচ্চাদেরকেও শিখিয়ে দিলে তারাও সহজেই সুস্থ থাকতে পারে।

তথ্যসূত্র:

Prevention of Food and Water Borne Illness (gnb.ca)

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সম্পর্কিত পোস্ট

আরও আরও...আর পাওয়া যায়নি.