করােনা সংক্রান্ত তথ্য

মাস্ক পরলে অস্বস্তি হলে কী করবেন?

কোভিড-১৯ থেকে সুরক্ষার অন্যতম রক্ষাকবচ হলো মাস্ক। কিন্তু অনেকেই মাস্ক পরছেন না। মাস্ক পরতে না চাওয়ার কারণ হিসেবে বেশিরভাগ মানুষই অস্বস্তিবোধকে দায়ী করেন। কিন্তু করোনা সংক্রমণ কমানো কিংবা নিজে সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা পেতে এর বিকল্প নেই। তাই, মাস্ক পরতে অস্বস্তি যেন না লাগে তার জন্য কী করতে পারেন চলুন সেটাই জেনে নেওয়া যাক।

শ্বাস-প্রশ্বাসের এই কৌশলটি কাজে লাগান:

মাস্ক পরলে অনেকেরই নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। কারো কারো ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট বা অ্যাজমার মতো শারীরিক সমস্যার কারণে এটা হয়। তাদের ক্ষেত্রে মাস্ক পরাটা জরুরি না।  তবে এই সমস্যাটা বেশিরভাগের ক্ষেত্রেই মানসিক। কানাডার মনস্তাত্ত্বিক রোগ বিষয়ক সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান সিবিটি অ্যাসোসিয়েটসের মতে, এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ মেলাতে পারে শ্বাস-প্রশ্বাসের একটি ব্যায়াম যা ‘বক্স ব্রেথিং’ নামে পরিচিত। এই প্রক্রিয়ায় ১-৪ পর্যন্ত গুনতে গুনতে শ্বাস নিন, ৪ পর্যন্ত গুনতে গুনতে দম ধরে রাখুন, ৪ পর্যন্ত গুনতে গুনতে শ্বাস ছাড়ুন এবং ৪ পর্যন্ত গুনতে গুনতে আবার শ্বাস নিন। অর্থাৎ ধীর গতিতে শ্বাস নিন, কয়েক সেকেন্ড শ্বাস ধরে রেখে আবার ধীর গতিতে ছাড়ুন। এতে আপনার স্নায়ু শান্ত হবে, শ্বাসতন্ত্রের উপকার হবে এবং মাস্ক পরে শ্বাস গ্রহণ ও ত্যাগের অভ্যাস হবে।

আরামদায়ক মাস্ক নির্বাচন করুন:

বাজারে বিভিন্ন আকারের এবং বিভিন্ন উপাদানের মাস্ক পাওয়া যায়। মাস্ক নির্বাচনের ক্ষেত্রে আরামের থেকে বরং সুরক্ষা দিতে পারার ক্ষমতাকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত। কাপড়ের মাস্কের থেকে সার্জিক্যাল কিংবা মেডিকেল মাস্ক সুরক্ষা দেওয়ায় বেশি কার্যকর। এই মাস্কগুলো কাপড়ের মাস্কের চাইতে হালকা ও পাতলা হয়ে থাকে। আর কাপড়ের মাস্ক ব্যবহার করলে তা যেন অবশ্যই তিন স্তর বিশিষ্ঠ হয় সেটা খেয়াল রাখতে হবে। কানের চারপাশে থাকা মাস্কের রবার বা ইলাস্টিক যদি আপনার অস্বস্তির কারণ হয় তবে এমন মাস্ক বেছে নিন যাতে কাপড়ের ফিতা থাকে। দুই কানের পাশের ফিতা মাথার পেছনে আঁটকে রাখা যায় এমন মাস্কও বেছে নিতে পারেন। মাস্কের ফিতা মাথার পেছনে আটকানোর জন্য প্লাস্টিকের হোল্ডার পাওয়া যায়। এটি ব্যবহার করেও অস্বস্তি কমাতে পারেন।

বিরতি নিন:

খুব বেশি অস্বস্তিবোধ হলে নিরাপদ সামাজিক দূরত্বে থেকে কিংবা একটু ফাঁকা জায়গায় মুক্ত বাতাসে অল্প সময়ের জন্য মাস্ক খুলে মন ভরে শ্বাস নিন। এরপর আবার মাস্ক পরে ফেলুন। এতে অস্বস্তি কমবে। তবে জনসমাগম রয়েছে কিংবা নিরাপদ শারীরিক দূরত্বে না থাকলে মাস্ক খুলবেন না। মনে রাখতে হবে, মাস্ক খোলা বা পরার আগে অবশ্যই হাতটা ভালোভাবে সাবান পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে কিংবা স্যানিটাইজার দিয়ে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে।

“মাস্ক পরতেই হবে” এই বাক্যটি মাথায় গেঁথে ফেলুন:

সঠিক নিয়মে মাস্ক পড়লে যে কোভিড ১৯ থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায় এটা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। তাই মাস্কের বিকল্প নেই। এমনকি আপনি যদি কোভিডের বুস্টার ডোজের টিকাও দিয়ে ফেলেন তবুও সকলের সুরক্ষার জন্য আপনাকে ঘরের বাইরে মাস্ক পরতেই হবে। তাই মাস্ক পরাটাকে অভ্যাস বানিয়ে ফেলার চেষ্টা করুন। এজন্য যেটি করতে হবে তা হলো নিজেকে বোঝানো। আপনার এতটুকু কাজে যদি আপনি ও আপনার চারপাশের সবাই সুরক্ষিত থাকে তবে সেই চেষ্টাটাই করাটা ভালো না?

রেফারেন্স লিঙ্ক:

১। https://www.cbtassociates.com/confronting-mask-discomfort/

২। https://www.osfhealthcare.org/blog/struggling-to-wear-a-mask-follow-this-advice/

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সম্পর্কিত পোস্ট

আরও আরও...আর পাওয়া যায়নি.