মাসিক বা ঋতুস্রাব নারী দেহের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। একটা নির্দিষ্ট বয়সের (৪৫ থেকে ৫৫ বছর) পর ঋতুচক্র স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যায়। একেই মেনোপজ বলে। যদি কারো ১২ মাসের বেশি সময় ধরে ঋতুস্রাব /মাসিক বন্ধ থাকে তাহলেই ধরে নিতে হবে এটি মেনোপজ।
মেনোপজে নারীর ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বকোষ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় নারীদেহে বিভিন্ন প্রজননের হরমোন কমে যায় এবং তার নানানরকমের প্রভাব পড়ে নারীদের শরীরে।
মেনোপজের লক্ষণ
প্রতিটি নারীর মেনোপজের অভিজ্ঞতা আলাদা। তবে এর লক্ষণগুলো গুরুতর হতে পারে যদি মেনোপজ হঠাৎ বা অল্প সময়ের মধ্যে ঘটে। ক্যান্সার, হিস্টেরেক্টমি (জরায়ু ফেলে দেওয়ার অপারেশন), ধূমপানের ইতিহাস ডিম্বাশয়ের জন্য ক্ষতিকর যার ফলে, লক্ষণগুলোর তীব্রতা এবং সময়কাল বৃদ্ধি করে।
মেনোপজের সময় নারীর পরিবর্তনগুলো একেকজনের ক্ষেত্রে একেকরকম এবং সব লক্ষণ সবার প্রকাশ নাও পেতে পারে। লক্ষণগুলো হলো:
– যৌন অনুভূতি বা ইচ্ছা না হওয়া
– যোনিপথ শুষ্ক হয়ে যাওয়া
– প্রস্রাবে নিয়ন্ত্রণ না থাকা
– প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া এবং মূত্রনালির সংক্রমণ (ইউটিআই)
– ঘুমের সমস্যা হওয়া
– মাথাব্যথা
– হঠাৎ গরম লাগা
– রাতে ঘাম হওয়া
– ত্বক, মুখ এবং চোখ শুষ্ক হয়ে যাওয়া
– কালশিটে বা কোমল স্তন
– বুক ধড়ফড়ানি
– পেশি ভর হ্রাস
– হাড়ের ভর হ্রাস
– গিরায় গিরায় ব্যথা বা শক্ত হয়ে যাওয়া
– চুল পাতলা হওয়া
– মুখ, ঘাড়, বুক এবং পিঠের ওপরের অংশে চুল বৃদ্ধি পাওয়া
– বিষণ্ণতা
– উদ্বেগ
– মেজাজি হয়ে যাওয়া
– মনোনিবেশ করতে অসুবিধা
– কিছু মনে না থাকা বা স্মৃতি সমস্যা
বেশিরভাগ নারীদের ক্ষেত্রে জীবনের সর্বশেষ মাসিকের প্রায় চার বছর আগে থেকেই মেনোপজের লক্ষণগুলো শুরু হয়। একজন নারীর শেষ মাসিকের প্রায় চার বছর পর পর্যন্ত লক্ষণগুলো প্রায়ই চলতে থাকে।
আমাদের দেশে মেনোপজকে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে ভাবা হয় না। যেটি একটি ভুল ধারণা। এটি নারীদের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং এসময় নারী শরীরে অনেক জটিলতাও দেখা দিতে পারে। তাই লজ্জা ভেঙে, নিজের এবং পরিবারের খাতিরেই এসব লক্ষণ দেখা গেলে গাইনি ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
তথ্যসূত্রঃ Menopause: Symptoms, Causes, Treatment, and More (healthline.com)