খাদ্য-পুষ্টি ও জীবনযাত্রা

কোন ধরনের ব্যায়াম “স্ট্রেস” কমায়?

স্ট্রেসের সাথে আমরা সবাই-ই কম বেশি পরিচিত। আমাদের নগরজীবনের এক নিয়মিত সমস্যা “স্ট্রেস” যেটি আমাদের আরো অনেক শারীরিক এবং মানসিক রোগের অন্যতম প্রধান কারণ। স্ট্রেস থেকে রক্ষা পেতে অনেকেই অনেক কিছু করেন–তবে আপনি যদি জীবনের চাপ বা এই স্ট্রেসকে পাশ কাটিয়ে দীর্ঘ সুস্থ জীবন চান তবে সবচাইতে সহজ সমাধান হলো: ব্যায়াম করা শুরু করুন। 

চলুন প্রথমেই জেনে নেই স্ট্রেস প্রতিরোধে আমাদের কতটা ব্যায়াম করা দরকার।

স্ট্রেসকে দূরে রাখতে প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট অর্থাৎ কমপক্ষে পাঁচ দিন ৩০ মিনিট মাঝারি “অ্যারোবিক” ব্যায়ামের পরামর্শ দেয় আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন। যদি আপনার সময় কম থাকে, পুরো ৩০ মিনিটের সেশনটি সারাদিনে তিনবার ১০-মিনিট করে ভেঙে ভেঙে করতে পারেন।

এর পাশাপাশি আপনার সাপ্তাহিক রুটিনে পেশি শক্তিশালী করার ব্যায়ামগুলোর কমপক্ষে দুইটি সেশন রাখা জরুরি। এ ব্যায়ামগুলো  আপনার বাহু, কাঁধ, বুক, পিঠ, পেট, পা এবং অন্যান্য পেশিকে সবল রাখতে সহায়তা করে।

তবে যত সহজে বলে দেওয়া গেল নিয়মিত ব্যায়াম করা যে ততটা সহজ না সেটা আমরা সবাই-ই জানি। এজন্য প্রয়োজন অভ্যাসের। শরীরচর্চার সাথে ধীরে ধীরে আপনার শরীরকে মানিয়ে নিন। প্রথমে না হয় সপ্তাহে তিন দিন ২০ মিনিট করে জোরে জোরে হাঁটুন এবং পরে সেখান থেকে ধীরে ধীরে বাড়ান।

কী ধরনের ব্যায়াম স্ট্রেস থেকে মুক্তি দেয়? 

স্ট্রেস কমানোর জন্য যেসব ব্যায়াম–সেগুলো করার জন্য আপনাকে ক্রীড়াবিদ হতে হবে না। প্রায় যেকোনো ধরনের ব্যায়াম সহায়ক হতে পারে। মূল কথা হলো ঘাম ঝরতে হবে, হার্টবিট স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ করে বেশ কিছুক্ষণ ধরে রাখতে হবে। মাঝারি মানের যে-কোনো ব্যায়ামই এগুলোর জন্য যথেষ্ট। 

মাঝারি অ্যারোবিক ব্যায়ামের মধ্যে আছে:

  • সাইকেল চালানো
  • দ্রুত হাঁটা বা জগিং
  • সাঁতার কাটা 
  • টেনিস 
  • নাচ
  • রোয়িং

এমনকি শীতকালের প্রিয় খেলা ব্যাডমিন্টন

পেশি-শক্তিশালী ব্যায়ামের ক্ষেত্রে ভারোত্তলনকে বিবেচনা করতে পারেন।

এমনকি বাগান করা বা লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি বেয়ে ওঠার মতো সহজ কিছু ব্যায়ামও আপনার স্ট্রেস কমিয়ে দিতে পারে।

“ব্যায়াম” শব্দটা শুনলেই আমরা অনেকে ভয় পেয়ে যাই। এই ভয়টা দূর করতে হবে। তাই আপনি উপভোগ করেন এমন কোনো শরীরচর্চা দিয়ে শুরু করা ভালো। আপনি আনন্দে থাকলে ব্যায়াম আপনার দৈনন্দিন কাজের অংশ হয়ে উঠবে, তখন আর এটাকে বোঝা মনে হবে না।

ব্যায়ামের ভীতি কাটানোর একটা ভালো উপায় হলো বন্ধু বা পরিবারের সাথে মিলে একসাথে শরীরচর্চা করা। যেমন দুই বন্ধু মিলে দৌড়ান বা সাঁতার কাটেন কিংবা পরিবারের সবাইকে নিয়ে হাঁটতে বের হন। এতে ব্যায়ামের শারীরবৃত্তীয় উপকারগুলো বেড়ে যায় এবং পাশাপাশি বন্ধু বা পরিবারের সাথে সম্পর্কটাও আরো ভালো হয়ে ওঠে, যা স্ট্রেস কমাতে আরো বেশি সাহায্য করে। 

তবে সব বয়সের জন্য সব ধরনের ব্যায়াম নয়। আপনার বয়স এবং শারীরিক সক্ষমতার ওপর নির্ভর করেই কোন ধরনের ব্যায়াম করবেন এবং কতক্ষণ করবেন সেটা ঠিক করে নেওয়া উচিত। প্রয়োজনে আপনার ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করুন, তিনি আপনাকে আপনার শরীরের ফিটনেস অনুযায়ী পরামর্শ দিবেন।

তথ্যসূত্র:

https://www.healthline.com/health/heart-disease/exercise-stress-relief#How-Much-Exercise-Do-You-Need?

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সম্পর্কিত পোস্ট

আরও আরও...আর পাওয়া যায়নি.