শিশুর যত্ন ও বেড়ে উঠা

শিশুদের স্কুলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখব কীভাবে?

করোনা মহামারিতে আমাদের অন্যতম হাতিয়ার হলো সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। অন্য যেকোনো জায়গার চেয়ে শিশুদের

স্কুলে সামাজিক দূরত্ব মানে একে অপরের থেকে কমপক্ষে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখা বেশ চ্যালেঞ্জিং ব্যাপারই বটে। দেশের সকল বিদ্যালয়গুলোই

এখন খুলে গিয়েছে–তবে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা কিন্তু এখনো কেটে যায়নি। তাই বিদ্যালয়গুলোতে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করার

জন্য কিছু বিষয়ের দিকে লক্ষ রাখাটা খুব জরুরি। এগুলো হলো:

  • স্কুলে উপস্থিত প্রত্যেকের মধ্যে কমপক্ষে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
  • দুই টেবিলের মাঝে ব্যবধান বাড়াতে হবে (ডেস্কের মধ্যে কমপক্ষে ১ মিটার)।
  • স্কুল এবং স্কুল-পরবর্তী কার্যকলাপের জন্য ক্লাসে শিক্ষার্থী সংখ্যা সীমিত করতে হবে। অবকাশ বা খেলার বিরতি এবংমধ্যাহ্নভোজ বা টিফিনের  বিরতিগুলো উলটে-পালটে দিতে হবে যাতে বিভিন্ন ক্লাসের ছাত্রদের মধ্যে মেলামেশা কম হয়।
  • শ্রেণিকক্ষে প্রবেশের ক্ষেত্রে আলাদা দরজা ব্যবহার করা যেতে পারে, যদি থাকে।
  • বিল্ডিং/ক্লাসরুমে প্রবেশ এবং ত্যাগ করার জন্য প্রতিটি ক্লাসের জন্য আলাদা সময় অথবা নিয়ম করা যেতে পারে।
  • প্রতি শ্রেণির পাঠদান শুরু এবং শেষের সময় পরিবর্তন করা যেতে পারে। যথাসম্ভব সব ছাত্র ও শিক্ষক একসাথে না জড়ো করাই শ্রেয়।
  • শিশুকে স্কুলে আনা-নেওয়ার সময় ভিড় হতে না দেওয়া ভালো। এমন রুটিন করলে ভালো যাতে প্রতিটি শ্রেণির আনা-নেওয়া আলাদা সময়ে হয়।বিশেষ করে বয়স্কদের দ্বারা, যেমন দাদা-দাদি, আপাতত না আনা-নেওয়া করাই ভালো।
  • প্রবেশপথের চারপাশে সারিবদ্ধভাবে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে পথে চিহ্ন এঁকে, বা দড়ি অথবা অন্যান্য উপায় ব্যবহার করুন।
  • যতটা সম্ভব শ্রেণিকক্ষে বায়ুচলাচল নিশ্চিত করতে হবে। সম্ভব হলে ক্লাসগুলো ঘরের বাইরে নেওয়া যেতে পারে।
  • স্কুলের পর শিক্ষার্থীদের একত্রিত না হতে উৎসাহিত করুন।
  • একই ক্লাসকে ভেঙে কয়েকটা সেকশন করা যেতে পারে। সব শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে একই দিনে নাও ক্লাস করানো যেতে পারে।
  • প্রতিদিন ক্লাসের শুরুতে সামাজিক দূরত্বের কথা মনে করিয়ে দেওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব মেনে চলাটা কেনদরকার সেটাও শিশুদেরকে নিয়মিত মনে করিয়ে দেওয়া জরুরি।
  • সব শিক্ষার্থী যেন একই গেট দিয়ে ভিড় না করে প্রবেশ করে সেটা লক্ষ রাখতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বের হওয়ার সময়ওসিঁড়ি, করিডর এবং গেটে ভিড় না হয়ে সেটা খেয়াল রাখতে হবে। দুই ক্লাসের মাঝের সময়টাতে কিংবা স্কুল ছুটির সময় সব ক্লাসকেএক সাথে ছুটি না দিয়ে বরং আগে-পিছে করে ছুটি দিলে স্কুল থেকে বের হবার সময় সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করা সহজ হবে।
  • স্কুলে যদি কোনো শিশু কোভিড আক্রান্ত হয় তবে সাথে সাথে তাকে অন্য শিশুদের থেকে আলাদা করতে হবে এবং প্রয়োজনেবাকি শিশুদেরকেও কয়েকদিনের জন্য অনলাইনে ক্লাসের ব্যবস্থা করতে হবে।
  • স্বাস্থ্যবিধির নিয়মগুলো রপ্ত করার জন্য ছোটোখাটো পুরস্কারও রাখা যেতে পারে। শিশুরা খেলতে ভালোবাসে,উপহার এবং পুরস্কার পেতে ভালোবাসে।তাদেরকে এসব দিয়ে উদ্‌বুদ্ধ করা উচিত।

শিশুদেরকে সামাজিক দূরত্ব শেখানোর পেছনে স্কুলের শিক্ষক এবং বড়োদের ভূমিকা অনেক বেশি। বলা হয়ে থাকে শিশুরা বড়োদেরকে দেখেই শেখে।

তাই স্কুলগুলোতে শিক্ষক এবং অভিবাবকরা যদি সামাজিক দূরত্ব মেনে চলেন, মানে একে অপরের থেকে কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখেন

তাহলে শিশুদেরকে সামাজিক দূরত্ব রক্ষার বিষয়টা মানানো অনেক বেশি সহজ হবে। 

তথ্যসুত্র:

https://www.who.int/emergencies/diseases/novel-coronavirus-2019/question-and-answers-hub/q-a-detail/coronavirus-disease-covid-19-schools

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সম্পর্কিত পোস্ট

আরও আরও...আর পাওয়া যায়নি.