গর্ভকালীন সমস্যা ও স্ত্রী রোগ

গর্ভাবস্থার প্রতি সপ্তাহ: সপ্তাহ ১

গর্ভধারণের সময় সবার আগে একজন নারী যে বিষয়টি লক্ষ করেন, তার মাসিক বা পিরিয়ড বন্ধ হয়ে গেছে৷ তবে মাসিক বন্ধ হলেই যে গর্ভবতী, এমন ভাবার কোনো কারণ নেই৷ বিভিন্ন রোগের কারণেও নারীদের অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা হতে পারে৷

আপনার মাসিক যদি বন্ধ হয়ে থাকে তবে আপনি গর্ভবতী কি না তা নিশ্চিত হবার জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা হলো প্রেগন্যান্সি টেস্ট৷ প্রেগনেন্সি স্ট্রিপের মাধ্যমে ঘরে বসে প্রস্রাবের নমুনা পরীক্ষা করেই জেনে নিতে পারবেন আপনি গর্ভবতী কি না৷  প্রায় বেশিরভাগ ফার্মেসিতেই এই প্রেগন্যান্সি কিট পাওয়া যায়৷ তবে প্রেগনেন্সি স্ট্রিপে অনেক সময়ই ফলস পজিটিভ বা ফলস নেগেটিভ রেজাল্ট আসতে পারে। এ কারণে স্ট্রিপ দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট করতে চাইলে কমপক্ষে তিনটি আলাদা স্ট্রিপ দিয়ে টেস্ট করা ভালো। এছাড়া ঘরে বসে পরীক্ষার ফলাফল যাই আসুক না কেন, আপনি যদি সন্দেহ করেন আপনি প্রেগনেন্ট–তবে অবশ্যই ক্লিনিক বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে নেওয়া ভালো।

যেভাবে গর্ভকাল আপনি নিজেই হিসাব করতে পারেন:

ধরুন আপনার মাসিক শুরু হয়েছে মাসের ১০ তারিখে৷ ১৫ তারিখে সেটা শেষ হলো৷ পরবর্তী মাসের ১০ তারিখের আশেপাশের সময়েই আপনার আবার মাসিক হবার কথা৷ কিন্তু সেটা যদি না হয়ে থাকে এবং পরীক্ষার মাধ্যমে যদি নিশ্চিত হন যে আপনি গর্ভবতী তবে আগের মাসের ১০ তারিখ থেকে আপনার গর্ভধারণের সময় গণনা করা হবে৷

অর্থাৎ আপনার সবর্শেষ মাসিকের ১ম দিনই হলো আপনার গর্ভধারণের প্রথমদিন৷

গর্ভকালীন সময়ের শুরুতে যেসব শারিরীক পরিবর্তন দেখা দিতে পারে:

  • স্তনে বিশেষত বোঁটায় খোঁচাখোঁচা ভাব বা অস্বস্তিবোধ হতে পারে৷ স্তন ফুলে যেতে পারে।
  • যোনির সামনের অংশটি গাঢ় কিংবা কালচে কিংবা ফ্যাকাশে গোলাপি রঙের হয়ে যাওয়া৷ 
  • যোনি থেকে হালকা রক্তপাত হওয়া। 
  • স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিমাণে সাদাস্রাব হওয়া৷ 
  • খাদ্যাভ্যাসে কোনো পরিবর্তন লক্ষ করা৷ যেমন–হঠাৎ কোনো কোনো খাবারের প্রতি তীব্র আকর্ষণবোধ কিংবা প্রিয় কোনো খাবারের প্রতি অনীহা৷
  • ক্লান্তি বা অবসন্ন বোধ হতে পারে৷ আপনার গর্ভের যে ভ্রূণটি বেড়ে উঠছে তার জন্য অতিরিক্ত কিছু শক্তি প্রয়োজন৷ সেগুলো সে আপনার শরীর থেকেই নিয়ে থাকে৷ তাই এমন বোধ হতে পারে৷ এই সময়ে আপনার পর্যাপ্ত খাবার এবং পরিমিত বিশ্রাম খুবই দরকার৷

নিয়মিত চেকআপের জন্য যেখানে যোগাযোগ করা যায়:

আপনি গর্ভবতী হয়েছেন এই বিষয়টি নিশ্চিত হবার দ্রুততম সময়ের মধ্যে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন৷ নিম্নে বর্ণিত যেকোনো জায়গা থেকে আপনার গর্ভকালীন সময়ের সেবা পেতে পারেন৷ 

  • বিভাগীয় বা সদর হাসপাতাল বা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাইনি বিভাগে৷ 
  • আপনার জেলার যেকোনো মেটারনিটি ক্লিনিকে৷ 
  • বিভিন্ন কমিউনিটি ক্লিনিক বা এনজিও যেমন ব্র্যাক, সূর্যের হাসি ক্লিনিক ইত্যাদি৷
  • যেকোনো গাইনি ডাক্তারের প্রাইভেট চেম্বার৷

মনে রাখতে হবে, একজন গর্ভবতীর নিজের এবং সন্তানের সুস্থতার জন্যই দ্রুততম সময়ে ডাক্তারের কাছে যাওয়াটা জরুরি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সম্পর্কিত পোস্ট

আরও আরও...আর পাওয়া যায়নি.