গর্ভাবস্থায় দেহের ওজন বৃদ্ধি পাওয়া স্বাভাবিক। সন্তান জন্ম দেওয়ার নির্দিষ্ট সময় পর সহজ কিছু ব্যায়াম এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে গর্ভাবস্থায় সৃষ্টি হওয়া পেটের মেদ এবং দেহের বাড়তি ওজন কমানো সম্ভব।
বেশিরভাগ চিকিৎসক ও থেরাপিস্ট–নরমাল ডেলিভারি হওয়া নারীদের সন্তান জন্মদানের ৬ সপ্তাহ এবং সিজারিয়ান ডেলিভারি হওয়া নারীদের সন্তান জন্মদানের ৮ সপ্তাহ পর থেকে ব্যায়াম বা ডায়েট করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সন্তান জন্মদানের পর পেটের মেদ কমানোর কয়েকটি উপায় আছে। সেগুলো হলো–
হাঁটা:
প্রতিদিন অন্তত কিছুটা সময় হাঁটার চেষ্টা করুন। সদ্য গর্ভাবস্থা পার করায় ব্যায়াম করা আপনার জন্য সম্ভব না
হলে শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিতে হাঁটা সবচেয়ে সহজ উপায়।
গভীর শ্বাসের ব্যায়াম করা:
পেটের পেশিকে সংকুচিত করে রেখে গভীরভাবে শ্বাস নেওয়ার এই ব্যায়ামটি পেশিকে আরাম দেওয়ার পাশাপাশি
পেটের মেদ কমাতেও ভূমিকা রাখে। সোজা হয়ে বসুন, গভীরভাবে শ্বাস নিন এবং পেটের পেশি সংকুচিত রাখুন, কয়েক সেকেন্ড
অপেক্ষা করুন, এবার পেশির সংকোচন ছেড়ে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন।
শিশুকে বুকের দুধ পান করানো:
অ্যাকাডেমি অব নিউট্রিশিয়ান অ্যান্ড ডায়েটেটিক্সের মতে, স্তন্যদানকারী মা প্রতিদিন ৪০০-৫০০ ক্যালরি খরচ করেন বুকের দুধ উৎপাদন করতে।
তার মানে শিশুকে বুকের দুধ পান করাতে একটি ব্যায়ামের সমপরিমাণ ক্যালরি খরচ করতে হয়।
সঠিক ব্যায়াম করুন: বাড়তি মেদ জমা পেটকে আগের অবস্থায় নিতে এমন কিছু ব্যায়াম করতে পারেন যেগুলো পেটের মেদ কমাতে বেশি কার্যকর।
পেলভিক টিল্ট: পিঠ মেঝেতে রেখে সোজা হয়ে শুয়ে পড়ুন, পা ভাঁজ করে পায়ের পাতা মেঝে বরাবর সোজা করে রাখুন।
নাভি ভেতরের দিকে অর্থাৎ মেরুদণ্ডের দিকে সংকুচিত করুন। নিতম্ব সংকুচিত করুন এবং ৫ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এভাবে বিশ বার পুনরাবৃত্তি করুন।
ফোর আর্ম প্ল্যাঙ্ক: দুই হাতের ওপর ভর করে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন, পায়ের আঙুলের ওপর ভর করে শরীরকে তুলে ধরুন, নিতম্ব সংকুচিত করুন এবং ২০ সেকেন্ড অপেক্ষা করুন, পুনরাবৃত্তি করুন।
রিভার্স ক্রাঞ্চ: শরীরের দুই পাশে হাত রেখে সোজা হয়ে শুয়ে পড়ুন, হাঁটু বাঁকান এবং বুকের কাছে আনার চেষ্টা করুন, দুই সেকেন্ড ধরে রাখুন, ১০বার পুনরাবৃত্তি করুন।
পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন:
আপনার সঙ্গে শিশুর পুষ্টি জড়িত, তাই পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করুন। খাবারের তালিকায় সঠিক ভারসাম্যযুক্ত কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন এবং ফ্যাট রাখতে হবে।
- প্রচুর পানি পান করুন।
- খাদ্যতালিকায় শাকসবজি ও ফলমূল রাখুন।
- রাখতে পারেন টক দই ও লো ফ্যাটের দুগ্ধজাত খাবার।
- আঁশযুক্ত খাবার যেমন- ওটস, বীজ জাতীয় শস্য, ডাল ইত্যাদি খান নিয়মিত।
ব্যায়াম ও ডায়েট মেনে চলার পরও পেটের মেদ না কমলে হতাশ হবেন না। বলা হয়ে থাকে, গর্ভাবস্থায় পেটের মেদ তৈরিতে যেমন ৯ মাস সময় লাগে, তেমনি এটি কমতেও ৯ মাস সময় লাগে। তাই, ধৈর্য ধরে চেষ্টা চালিয়ে যান।
তথ্যসূত্র:
https://www.healthline.com/health/womens-health/postpartum-belly#losing-belly-weight
https://www.webmd.com/parenting/baby/6-exercises-for-new-moms